Tuesday 2 June 2015

কখন আসবে এখনো পারি নি জানতে
প্রেয়সী কোথায় তুমি ?
অনেকগুলো গল্প জমিয়ে রেখেছি
ভালবাসার রঙে রাঙ্গিয়েছি সাতরঙা রামধনু
রাতজাগা চোখে , আলুথালু চুলে
না হয় খুঁজে নেবো মুহুর্তের মাঝে
শরীরের চেনা গন্ধ -যেন আকাশের মাঝে আর একটা আকাশ
মনের ভিতরে অজানা ঘূর্ণি 
সাতাশ টা বসন্তের আগেও আসে নি 
এরকম চিরন্তন অকারণ হাসি 
জলজ  ফোয়ারা র উদোম টানে 
গুছিয়ে রাখা ভালবাসার সুতো। 


                                      .........স্বপ্ন সোম 


একবার তুমি
একবার তুমি ভালোবাসতে চেষ্টা করো-
দেখবে, নদির ভিতরে, মাছের বুক থেকে পাথর ঝরে পড়ছে
পাথর পাথর পাথর আর নদী-সমুদ্রের জল
নীল পাথর লাল হচ্ছে, লাল পাথর নীল
একবার তুমি ভালোবাসতে চেষ্টা করো ।
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়
সমস্ত পায়ে-হাঁটা পথই যখন পিচ্ছিল, তখন ওই পাথরের পাল একের পর এক বিছিয়ে
যেন কবিতার নগ্ন ব্যবহার , যেন ঢেউ, যেন কুমোরটুলির সালমা-চুমকি- জরি-মাখা প্রতিমা
বহুদূর হেমন্তের পাঁশুটে নক্ষত্রের দরোজা পর্যন্ত দেখে আসতে পারি ।
বুকের ভেতরে কিছু পাথর থাকা ভাল
চিঠি-পত্রের বাক্স বলতে তো কিছু নেই - পাথরের ফাঁক - ফোকরে রেখে এলেই কাজ হাসিল-
অনেক সময়তো ঘর গড়তেও মন চায় ।
মাছের বুকের পাথর ক্রমেই আমাদের বুকে এসে জায়গা করে নিচ্ছে
আমাদের সবই দরকার । আমরা ঘরবাড়ি গড়বো - সভ্যতার একটা স্থায়ী স্তম্ভ তুলে ধরবো
রূপোলী মাছ পাথর ঝরাতে ঝরাতে চলে 
সমুদ্র
তসলিমা নাসরিন
কত কিছু দেখেছে জীবনে মা,
কত কলহ কোন্দল,
কত ঘৃণা,
কত স্বার্থপরতা প্রতিদিন।
কত কিছু মা’কে দেখতে হয়েছে,
কত গালাগালি, কত থুতু, কত লাথি ঝাঁটা!
সমুদ্রই দেখা হয়নি মা’র, কোনও একটা যেন তেন সমুদ্র।
কত কিছু শুনতে হয়েছে মা’কে,
কত মন্দ কথা!
কত কষ্ট পাওয়া, কত দুঃখ পাওয়া!
কত লজ্জায় মরে যাওয়া!
সমুদ্রের একটুখানি শব্দই শোনা হয়নি মা’র,

মা যদি একবার সমুদ্র দেখতে পেত!
একবার যদি মা সমুদ্র দেখতে পেত!
সমুদ্র যদি একবার প্রাণ ভরে দেখতে পেত মা!

বড় কিছুর  কাছে এলে বেদনাগুলো শুনেছি
একটু একটু উড়ে যেতে থাকে, ভেসে যেতে থাকে
হাওয়ায় বা স্রোতে বা চোখের জলে।
মা বেঁচেছিল অনেকগুলো বছর,
অনেকগুলো বছর মা বেঁচেছিল,
সমুদ্র কাছেই ছিল।
দেখা না হওয়ার যণ্ত্রণায়, তবু বলবো না, এসো
তসলিমা নাসরিন:
এই শহরেই তুমি বাস করবে, কাজে অকাজে দৌড়োবে এদিক ওদিক
কোথাও আড্ডা দেবে অবসরে, মদ খাবে, তুমুল হৈ চৈ করবে,
রাত ঘুমিয়ে যাবে, তুমি ঘুমোবে না।
ফাঁক পেলে কোনও কোনও সন্ধেয় এ বাড়ি ও বাড়ি খেতে যাবে, খেলতে যাবে,
কে জানে হয়তো খুলতেই যাবে আলগোছে কারও শাড়ি
আমার আঙিনা পেরিয়েই কোনও বাড়িতেই হয়তো।
এ পাড়াতেই হয়তো দু’বেলা হাঁটাহাঁটি করবে, হাতের নাগালেই থাকবে,
হয়তো কখনও জানিয়েও দেবে আমাকে, যে, কাছেই আছো,
কুঁকড়ে যেতে থাকবো, কুচি কুচি করে নিজেকে কাটতে থাকবো
দেখা না হওয়ার যণ্ত্রণায়, তবু বলবো না, এসো। বলবো না,
তোমাকে সুযোগ দেব না বলার যে তোমার সময় নেই, বা ভীষণ ব্যস্ত তুমি ইদানিং
তোমার অপ্রেম থেকে নিজেকে বাঁচাবো আমি।
তোমার সঙ্গে আমার দেখা হবে না।বছর পেরোবে, তোমার সঙ্গে দেখা হবে না আমার,
দেখা না হতে না হতে ভুলতে থাকবো তোমার সঙ্গে দেখা হওয়াটা ঠিক কেমন ছিল
কী রঙের সার্ট পরতে তুমি, হাসলে তোমাকে ঠিক কেমন দেখাতো,
কথা বলার সময় নখ খুঁটতে, চোখের দিকে নাকি অন্য কোথাও তাকাতে,
পা নাড়তে, ঘন ঘন চেয়ার ছেড়ে উঠতে, জল খেতে কিনা, ভুলতে থাকবো।
দেখা না হতে না হতে ভুলতে থাকবো তুমি ঠিক দেখতে কেমন ছিলে,
তিলগুলো মুখের ঠিক কোথায় কোথায় ছিল, অথবা আদৌ ছিল কিনা।
তোমার চুমু খাওয়াগুলো ঠিক কেমন, জড়িয়ে পেঁচিয়ে চুলে বা বুকে মুখ গোঁজাগুলো
ঠিক কেমন, ভুলতে থাকবো।
অনেকগুলো বছর পেরিয়ে যাবে, তোমার সঙ্গে আমার আর দেখা হবে না।
এক শহরেই, অথচ দেখা হবে না।
পথ ভুলেও কেউ কারও পথের দিকে হাঁটবো না,
আমাদের অসুখ বিসুখ হবে, দেখা হবে না।
কোনও রাস্তার মোড়ে কিংবা পেট্রোল পাম্পে কিংবা মাছের দোকানে, বইমেলায়, রেস্তোরাঁয়, কোথাও দেখা হবে না।
আরও অনেকগুলো বছর পর, ভেবে রেখেছি, যেদিন হুড়মুড় করে
এক ঝাঁক আলো নিয়ে সন্ধে ঢুকতে থাকবে আমার নির্জন ঘরে,
যেদিন বারান্দায় দাঁড়ালে আমার আঁচল উড়িয়ে নিতে থাকবে বুনো বৈশাখি
এক আকাশ চাঁদের সঙ্গে কথা বলবো যে রাতে সারারাত-
তোমাকে মনে মনে বলবোই সেদিন, কী এমন হয় দেখা না হলে,
দেখা না হলে মনে হতো বুঝি বেঁচে থাকা যায় না,
কে বলেছে যায় না, দেখ, দিব্যি যায়!
তোমার সঙ্গে দেখা হয়নি কয়েক হাজার বছর, তাই বলে কি আর বেঁচে ছিলাম না?
দিব্যি ছিলাম!
ভেবেছি বলবো,
তুমি তো আসলে একটা কিছুই-না ধরনের কিছু,
আমার আকাংখা দিয়ে এঁকেছিলাম তোমাকে,
আমার আকাংখা দিয়ে তোমাকে প্রেমিক করেছিলাম,
আমার আকাংখা দিয়ে তোমাকে অপ্রেমিকও করেছি
তোমাকে না দেখে লক্ষ বছরও বেঁচে থাকতে পারি!
অপ্রেমিককে না ছুঁয়ে, অনন্তকাল।
এক ফোঁটা চোখের জল বর্ষার জলের মতো ঝরে ধুয়ে দিতে পারে
এতকালের আঁকা সবগুলো ছবি, তোমার নাম ধাম দ্রুত মুছে দিতে পারে চোখের জল।
তোমাকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে।
আমাকে একা বলে ভেবো না কখনো, তোমার অপ্রেম আমার সঙ্গে সঙ্গে থাকে।

অভিমান
কাছে যতটুকু পেরেছি আসতে, জেনো
দূরে যেতে আমি তারো চেয়ে বেশী পারি।
ভালোবাসা আমি যতটা নিয়েছি লুফে
তারো চেয়ে পারি গোগ্রাসে নিতে ভালোবাসা হীনতাও।

জন্মের দায়, প্রতিভার পাপ নিয়ে
নিত্য নিয়ত পাথর সরিয়ে হাঁটি।

অতল নিষেধে ডুবতে ডুবতে ভাসি,
আমার কে আছে একা আমি ছাড়া আর ?

Friday 10 April 2015

তোমায় আমায় মিলে গল্প বানাবো 
পাহাড়ী নরম নদী , শক্ত পাথর 
সিক্ত  ঝরনার 
ভালোবেসে দুঃখ পায় নি 
কেউ কি আছে এমন ?
আমার সীমিত কল্পনায় 
অনেক স্বপ্ন বোনার সাহস তো নেই 
যেটুকুই থাক না কেনো  , সে তো শুধু তোমার  ই 
এক্ষুনি বলো না আবার 
যুক্তিহীন অনুভূতি , আলগা অস্থিরতা 
ধূর, ভালবাসা তো এরকম ই 
অকারনে কষ্ট পেলেও 
কাছাকাছি জড়িয়ে থাকার সুখ 
রাত্রি নামা মেঘলা সিঁদুরে 
আলুথালু চুলে 
সুখের ঝলসানো সোহাগ
সাধারণ আর অসাধারণ 
উদোম হাওয়ায় ছিন্ন অন্তরমহল 
দেহজ  যৌনতায় আবার  পেতে চাইবো তোমায় 
তোমায় আমায় মিলে গল্প বানাবো 
পাহাড়ী নরম নদী , শক্ত পাথর
আর 
সিক্ত ঝরনার 



 

Copyright 2010 Bangla Kobita.

Theme by WordpressCenter.com.
Blogger Template by Beta Templates.